Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

বার্তা

সম্মানিত শাজানপুরবাসী,

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের একজন গণকর্মচারি হিসেবে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নয় মাসের মরণপণ যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন করে। স্মরণ করছি জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যাদেরকে ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমি স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দান করেছিলেন। সেই সাথে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দেয়া ৩০ লক্ষ শহীদকে, সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোনকে যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ মহান বিজয় পেয়েছি। আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ও অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।


সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালি জাতির দীর্ঘ ২৩ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত ফসল ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে ‘৫২-র ভাষা আন্দোলন’, ‘৫৪-র নির্বাচন’, ‘৬২-র শিক্ষা আন্দোলন’, ‘৬৬-র ছয়দফা’, ‘৬৯-র গণঅভ্যুত্থান’ এবং ’৭০-র নির্বাচনে’র পথ পেরিয়ে বাঙালি জাতি উপনিত হয় ৭১-র ৭ই মার্চের মহান মিলন মোহনায়। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জনতার সমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাঙালির মুক্তির দিশারী, বঙ্গবন্ধু দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’। মূলত সেদিন থেকে শুরু হয় স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নবতর অধ্যায়। এরপর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ- বাংলাদেশ, যা বাঙালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেয় এদেশের মানুষকে। এদেশের মানুষ পায় লাল-সবুজের একটি পতাকা।


স্বাধীন বাংলাদেশ আজ একটি সুদৃঢ় ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে আছে। এ ভিত্তি তৈরি করেছে এদেশের আপামর জনসাধারণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক অতিমারীর এই সংকটকালেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক।আমরা আমাদের উচ্চ দারিদ্র্যসীমা ২৪.৩ শতাংশে এবং নিম্ন দারিদ্র্যসীমা  ১১ শতাংশের কাছাকাছি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি অল্প সময়ের ব্যবধানে এ দারিদ্র্যসীমাকে আরও কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোঃমধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রপ্তানী আয়ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার বেশি অর্জিত হয়েছে।


ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণ, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের নিকট অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমডিজির লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ। সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন, মা ও শিশু মৃত্যুহার কমানো, নারীর ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। সরকার কর্তৃক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এসডিজি পূরণেও বাংলাদেশ একইভাবে সফল হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।


কৃষিখাতে অভূতপূর্ব কিছু সাফল্যের জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ বারবার আলোচিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের নিবিড় প্রচেষ্টার ফল হিসেবে প্রায় ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বিস্তৃত করতে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ ভাতার হার ও আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা প্রণয়ন, তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১২,৭৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, একই সাথে অনেক সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ করাসহ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হার এবং জন্মহার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে সবাইকে হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে কাজ করতে হবে এবং দেশ গড়ার প্রত্যয়ে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত হবে । আসুন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সোনার বাংলা গড়ে তুলি। 


“জয় বাংলা” 

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। 


ধন্যবাদান্তে,

তাহমিদা আক্তার

উপজেলা নির্বাহী অফিসার 

শাজাহানপুর, বগুড়া